যে কারণে ন্যান্সির(Nancy) আত্মহত্যার চেষ্টা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বিকালে নেত্রকোনার নিজ বাড়িতে তিনি অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে গতকাল দুপুরে ন্যান্সি ৪০টি ঘুমের ওষুধ খান। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে তাকে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত ৮টার দিকে জরুরি ভিত্তিতে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা শেষে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাকির হোসেন জানান, ন্যান্সি অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তিনি প্রায় ৬০টি ঘুমের ওষুধ সেবন করেছিলেন। তার জ্ঞান ফিরেছে। তিনি কথা বলতে পারছেন। তবে কি কারণে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তা জানা যায়নি। এদিকে ন্যান্সির বড় ভাই জাকারিয়া নোমান জনি জানান, এ মুহূর্তে আসলে বিস্তারিত কিছু বলার মানসিকতা নেই। তবে এটুকু বলতে পারি ন্যান্সি এখন আউট অব ডেঞ্জার। আপনারা দোয়া করবেন। এর চেয়ে বিস্তারিত কিছু জানতে চাইলে কাল বলতে পারব। এদিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স সুফিয়া জেসমিন গতকাল সাংবাদিকদের জানান, ধারণা করা হচ্ছে শনিবার দুপুরে ন্যান্সি ৪০টি এর আগের দিন রাতে ২০টি ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ আলমও একই তথ্য দেন সাংবাদিকদের। তবে এ বিষয়ে ন্যান্সির স্বামী নাজিমুজ্জামান জায়েদের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোন বন্ধ ছিল। এদিকে নেত্রকোনার স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১২ সালে প্রথম স্বামী ব্যবসায়ী আবু সাঈদ সৌরভের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর গত বছর ৪ঠা মার্চ ময়মনসিংহ পৌরসভার কর্মচারী নাজিমুজ্জামান জায়েদের সঙ্গে বিয়ে হয় ন্যান্সির। নিকটাত্মীয় সূত্রে জানা গেছে, গেল এক বছর ধরেই ন্যান্সি চরম দুঃসময় পার করছিলেন নানা কারণে। এর অন্যতম কারণ মায়ের মৃত্যু। এরপর বিয়ে করে নতুন সংসার গুছালেও নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কিত পরিস্থিতিতে পড়েন ফেসবুকে বিনএপির সমর্থন করে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে। যে স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে গেল এক বছর ন্যান্সি পেশাগত ভাবে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন গণমাধ্যমে। সূত্র আরও জানায়, মায়ের মৃত্যুর পর ন্যান্সির বাবা নাঈমুল হক ফের বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। এটিও ছিল ন্যান্সির হতাশায় ডুব দেয়ার আরেকটি বড় কারণ। এদিকে কিছুদিন ধরে স্বামীর সঙ্গেও তার বনিবনা হচ্ছিল না। এরই মধ্যে তাদের একটি কন্যা সন্তানও হয়। ফ্ল্যাট ভাড়া করে ঢাকায় স্থায়ী হন ছ’মাস আগে। প্রায় দশ দিন আগে ঢাকা থেকে ন্যান্সি চলে যান নেত্রকোনায় বাবা নাঈমুল হকের কাছে। সূত্র জানায়, গেল প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই ন্যান্সির মুঠোফোন বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে গেল পাঁচদিন ধরেই ন্যান্সি নিয়মিত ঘুমের বড়ি সেবন করে আসছেন হতাশা নিবারণ কিংবা আত্মহননের জন্য।

0 comments:

Post a Comment